তারুণ্য স্থবিরতা পছন্দ করে না। তাই তো তরুণদের গতিশীল লাইফস্টাইলের প্রতিটি পর্বই প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে একটু একটু করে। আর এই পরিবর্তনশীলতার সবচেয়ে বড় প্রভাব লক্ষ্য করা যায় তরুণ-তরুণীদের পোশাকের দিকে তাকালেই। পোশাকের স্টাইলে নিত্য নতুন সংযোজন ও বিয়োজন যেন তারুণ্যের গতিশীলতারই পরিচয়।
পূর্ব ও পশ্চিমের সমন্বয়ে তৈরি হয় ফিউশনধর্মী পোশাক। যেসব পোশাকের কাটিং ও প্যাটার্নে পশ্চিমা স্টাইলের আদল বেশি। এসব ফিউশনধর্মী পোশাক তরুণ বয়সীদের কথা চিন্তা করেই তৈরি হয়। আমাদের দেশেও ফ্যাশন ডিজাইনাররা এমন ফিউশনধর্মী পোশাক তৈরি করছেন তরুণদের কথা মাথায় রেখে। ফ্যাশন বা স্টাইলের ক্ষেত্রে টিনএজদের উচ্ছ্বাসটা বরাবরই একটু বেশি। হাল ফ্যাশনের তরুণ-তরুণীরা ফিউশনধর্মী পোশাক যেমনি পরছেন, তেমনি ওয়েস্টার্ন আউটফিটের প্রতিও তাদের আগ্রহ। তারুণ্যের পছন্দের তালিকায় এখন প্রাধান্য পাচ্ছে টি-শার্ট, ফতুয়া, শর্ট পাঞ্জাবি, টপস, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট, টাইটস, জিন্স প্যান্ট ইত্যাদি পোশাক। বিভিন্ন পার্টিতে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক, রেস্টুরেন্টে বন্ধুদের আড্ডা- সবখানেই তারা ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
আজকের জনপ্রিয় পোশাক জিন্স বা ডেনিম, স্কার্ট, টপস, বেণ্ডজার সব কিছুই পশ্চিমা ফ্যাশনের অংশ। স্কার্ট, টপস পশ্চিমা ফ্যাশন হলেও বর্তমান সময়ে নকশা ও কাটিংয়ে এতে অনেকটা দেশীয় আদল দেয়া হয়েছে। বর্তমান ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের ওয়েস্টার্ন পোশাকের ভেরিয়েশন অনেক বেশি। প্রথমদিকে থাইল্যান্ড, হংকং, চায়না থেকে এসব পোশাক এ দেশে এলেও বর্তমানে আমদানি পোশাকের পাশাপাশি কিছু দেশীয় গার্মেন্ট দেশের চাহিদা মেটাতে তৈরি করছে এসব পোশাক।
শুধু লোকাল মার্কেট নয়, ব্র্যান্ডের সব ফ্যাশন হাউস তৈরি করছে এসব পোশাক। টিনএজ কিংবা তরুণীদের প্রিয় পোশাকের মধ্যে অন্যতম হল ফতুয়া বা টপস। দেশীয় স্টাইলে একটু লম্বা ছাঁটে তৈরি হয় ফতুয়া। আর পশ্চিমা আদলের তৈরি টপসের স্টাইল একসঙ্গে মিলে তৈরি হচ্ছে ফিউশনধর্মী পোশাক। এসব পোশাকের কোনোটিতে ফতুয়ার কাটিং বেশি লক্ষ্য করা যায় আবার কোনোটি একটু লং ফর্মে তৈরি করে টপসের প্যাটার্নে বানানো হয়েছে। আবার পার্টিসাজের জন্য অনেক তরুণীই এখন শাড়ির পাশাপাশি আস্থা রাখছেন ওয়েস্টার্ন গাউনের প্রতিও। হালকা নকশাদার কিংবা দেশীয় স্টাইল সংযুক্ত জমকালো কারুকার্যময় সেসব গাউন পার্টি ড্রেস হিসেবেই মানানসই। জিন্স কিংবা ফরমাল প্যান্টের সঙ্গে শার্ট কিংবা কুর্তি গায়ে চাপিয়েই দিব্যি অফিস করছেন কর্মজীবী নারীরা।
ওয়েস্টার্ন ড্রেস দুই ধরনের হয়। ক্যাজুয়াল ও ফর্মাল। ক্যাজুয়াল ড্রেস আর ফর্মাল ড্রেসের সাজ অবশ্যই ভিন্ন ধরনের হবে। ফর্মাল প্যান্ট-শার্ট পরলে সাজগোজ হবে একদমই সাদাসিদে। হালকা মেকআপের সঙ্গে হালকা গয়না। ক্যাজুয়াল প্যান্টের সঙ্গে ফতুয়া বা টপস পরলে কানে বড় দুল ও হাতে মোটা চুড়ি পরতে পারেন। ক্যাজুয়াল শার্টের সঙ্গে বড় মালা ভালো লাগবে। এ ধরনের ড্রেসে ছোট গয়না ভালো লাগবে না। সবচেয়ে মানানসই হল মাটির গয়না। প্যান্টের সঙ্গে টি-শার্ট পরলে কানে ও গলার গয়না নির্ভর করে টি-শার্টের গলার ধরনের ওপর। হাই নেক টি-শার্টে গলা আড়ালে থাকে বলে গয়না পরা যায় না। লো নেক টি-শার্টে গলায় লকেট পরতে পারেন।
জুতা হবে পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। ফরমাল পোশাকের সঙ্গে কালো জুতা-ই ভালো মানায়। ক্যাজুয়াল পোশাকের সঙ্গে রং মিলিয়ে জুতা পরতে পারেন। তবে ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে গ্লিপার মানাবে না। হাই হিল বা সেমি হিল পরতে পারেন। সঙ্গের ব্যাগটি নিন বড় আকৃতির। চাইলে নিতে পারেন বটুয়াও। যা-ই ব্যবহার করুন না কেন নিজের স্বাচ্ছন্দ্য এবং কাজের পরিবেশের দিকে খেয়াল রাখবেন।