বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন শাকিব খান। তিনি সুপারস্টার, কিং, নবাব। অথচ শাকিব নিজে এখনো ‘বড়’ হলেন না! সাম্প্রতিক সময়ে তার জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অন্তত তাই বলে। এ পর্যন্ত বহুবার তিনি সংবাদ শিরোনামে এসেছেন বিভিন্ন নেতিবাচক ঘটনা ঘটিয়ে। বিয়ে, সংসার, সন্তান, বিচ্ছেদ, প্রেম এমনকি শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে ইতিবাচক কোনো সংবাদে আসেননি তিনি।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শাকিবের জীবনে যা হয়েছে তার কিছুই হতো না যদি তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। একজন সুপারস্টারকে অনেকেই আইডল মানেন। তাই তারকার দায়িত্ববোধ একটু বেশি থাকতে হয়। সেই কাজটি করতে ব্যর্থ হচ্ছেন শাকিব।
সম্প্রতি এফডিসিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাবেক এই সভাপতির। এ ঘটনায় শাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগও দাখিল করা হয়েছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলোতে।
১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিনোদন সাংবাদিক জিয়াউদ্দিন আলম ও সুদীপ্ত সাঈদ খান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে গিয়ে অভিযোগপত্র জমা দেন। এর আগে দুপুরে আরও একটি চিঠি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতিতে (বাচসাস) পৌঁছে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এ দুই সাংবাদিক। অভিযোগ গ্রহণ করেন বাচসাস সভাপতি আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন ও শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
লিখিত বিবরণীতে বলা হয়, গত ৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার বিএফডিসিতে ‘শাহেনশাহ’ নামক চলচ্চিত্রের শুটিং চলছিল। বিকালের দিকে চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে সিনে ডিরেক্টরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিডাব) সদস্যদের বিরোধ বাধে। তাদের ঝগড়া প্রায় হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। পেশাগত দায়িত্বের কারণে সে পরিস্থিতির ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে ইউনিটের লোকজন সাংবাদিকদের বাধা দেন। এর পর শাকিব খান নিজে এসে মিডিয়া ভুবনের সাংবাদিক জিয়াউদ্দিন আলম ও নিউজজি২৪.কমের সুদীপ্ত সাঈদ খানের ওপর চড়াও হন। উপস্থিত আরও সাংবাদিকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন তিনি। এ সময় দুই সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেন শাকিব খান।
এক পর্যায়ে তাদের মোবাইল জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হয় এবং মোবাইল থেকে সেই ঘটনার ধারণকৃত ছবি, ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও ডিলিট করে দেওয়া হয়। এ কাজে শাকিবকে সহায়তা করেন পরিচালক শামীম আহমেদ রনী, প্রযোজক লিটন হাশমী ও সহকারী পরিচালক পূজনসহ ইউনিটের অনেকেই। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে শাকিব খান নানা মিথ্যাচার করে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করারও চেষ্টা করছেন। এ রকম অপেশাদার আচরণ কখনই কাম্য নয়। তারকাদের খবরগুলো মানুষের কাছে পৌঁছাতে কাজ করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। আর তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করা কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটা শাকিব খান অবশ্যই ভেবে দেখবেন। কারণ তিনি তো উঠতি কোনো চিত্রনায়ক নন। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে শাকিব কি এখনো ‘বড়’ হতে পারেননি?
মঈন আবদুল্লাহ
সাংবাদিক, দৈনিক আমাদের সময়